সোমবার, ১৭ জুন, ২০১৩

আমার আমেদাবাদ ভ্রমণ তৃতীয় ভাগ


পরের দিন আমার এবং স্ত্রীর কোন প্রোগ্রাম নেই বিকেলের দিকে কাঙ্কারিয়া লেক দেখার প্রোগ্রাম আছে। বেশ কিছু হয়তো হাঁটতে হতে পারে বলে বিছানায় শুয়ে রেষ্ট নেওয়া গেল। নাতিরা তাদের বাবা মা কে নিয়ে মার্কেটিং করবার জন্য বার হল। দুপুরে ওরা ফেরার পরে বেলা সাড়ে তিনটের সময় রেডী হয়ে নেওয়া গেল। প্রথমেই লেকের গেটে গিয়ে গাড়ী থেকে নামা হল। টিকিট কেটে ভেতরে ঢোকা গেল। লেকের ধারে অটল এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে আছে। ডিজেল এঞ্জিনে টানা তিনটে কোচে লোকে বসবে। প্রতি কোচে ৫০ জনের মত ধরে। টিকিটের জন্য বিরাট লম্বা লাইন। ট্রেনটা পুরো লেকের চারদিকে একটা চক্কর মেরে আসে। দেখা গেল এই দুটি রকম ট্রেন চলছে। কিন্তু তার আগেই নাতিদের আনন্দ দেখবার মত, ওদের জন্য কি নেই। দু চাকার সেগা ইলেকট্রিক বাইক, স্পীড বোট, জলে বাবলের মধ্যে হাটা, নাগিনা মহল আর তা ছাড়া যত রকমের সম্ভব স্ন্যাক্স। পয়সা ফেকো তামাশা দেখো। তারা লেগে গেল নতুন যা দেখেছে অর্থাৎ সেগা চালান, তার পরে মটর বোট চালান। সেগা চালানোর পরে বড় নাতির প্রশ্ন এগুলোর দাম কত সস্তা হলে কিনে নেওয়া যাবে সহজেই স্কুলে যাওয়া যাবে। দাম পরে জানা গেল  প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। মন্তব্য হল বড্ড বেশী দাম এর চেয়ে কার সস্তাজিনিষটা আগে অস্ট্রেলিয়াতে ক্রিকেট মাঠে দেখেছে। পাশেই হট এয়ার বেলুন নীচে গন্ডোলা তাতে চড়ে লোক উপরে কিছু চক্কর মেরে আসে। তবে আমরা থাকতে থাকতে ওটাতে কাউকে চড়তে দেখা গেলনা। আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হয়ে এল। লেকের চারদিক বাঁধানো তার উপরে নানান রঙ্গের আলো দিয়ে সাজানপ্রত্যেকটা স্টলে লোকের ভিড়, দাম অবশ্যি নর্মালের চেয়ে বেশী। তবুও এটা একটা জায়গা যেখানে বাচ্চারা এসে মজা করতে পারে। গাড়ী বাইরে পার্কিং করা ছিল। আমরা বেড়িয়ে ড্রাইভারকে ফোন করে ডাকলে সে গাড়ী নিয়ে আসে। গেটের দুদিকেই অটোর ভিড় কাজে গাড়িকে একটু রাস্তার উপর দ্বিতীয় লাইমে দাঁড়াতে হল। অমনি পুলিশের ডান্ডাবাজী, কিন্তু অটো ড্রাইভারদের উপর এসব হম্বি তম্বি চুপ। তারা তাদের মর্জি দাঁড়িয়ে লোক নামাচ্ছে কিম্বা তুলছে। কোন রকমে গাড়ীতে উঠে আমরা ফিরে এলাম

আমেদাবাদ শহরে যে জিনিষ আমাকে ইম্প্রেস করেছে সেটা হচ্ছে সহরটা দুভাগে ভাগ করা আছে। নদীর পশ্চিম দিক মডার্ণ, আর পূর্ব দিকে পুরনো গায়ে গায়ে লাগান পুরনো বিল্ডিং, রাস্তা সরু। নতুন দিকে বাসের জন্য রাস্তার মাঝখান দিয়ে ডেডীকেটেড বাস চলার জায়গা এবং তার মডার্ণ ষ্টেশনে মত করে স্টপ। । যদিও এছাড়া সাধারন বাস চলে। বেশীর ভাগ বাস যে এন ইউ আর এম ফান্ডে কেনা। দ্বিতীয় হচ্ছে যেখানে আন্ডারপাশ তৈরী করা হয়েছে তার দু দিকে ফুটপাথের পাশে এমেচার আর্টিস্ট দিতে নানাণ ধরণের ছবি আকানো হয়েছে যাতে গ্রাফিটি একে দেওয়াল নষ্ট না করা হয়।

কাঙ্কারিয়া লেক দেখে ফেরবার পরে হোটেলে বলে দেওয়া হল যে আগামী কাল আমরা ভোর পাচটার আগেই বেড়িয়ে যাবঅতএব আমাদের বিল ইত্যাদি যেন তৈরী করে রাখে। ইতিমধ্যে ঘরের টয়লেটের দরজা নিজের থেকেই লক হয়ে যাওয়াতে হোটেলের লোকেরা সেটাকে ঠিক করে উঠতে পারল না, এবং আমাদের বাধ্য হয়েই পাশের অন্য ঘরে ট্রান্সফার করতে হল। সকাল বা ভোররাত চারটের সময় ম্যানেজার কে ডাকতঁে হল কেননা বা্থরুমে জল নেই, টেলিফোন করে কোন সাড়া পাইনি বাধ্য হয়ে ডেস্কে গিয়ে দেখি ডিউটি বাবু পাশে কোচে শুয়ে দিব্যি নাক ডাকিয়ে ঘুমচ্ছেন। কানের কাছে জোরে ডাক দেওয়াতে তিনি উঠে তার বেয়ারাকে পাঠালেন পাম্প চালাতে। সাথে বললেন মিনিট পাচেকের মধ্যে জল এসে যাবে। হায় আমার কপাল। পাচটার সময় আমি যখন হোটেল ছাড়ছি তখনও কলে ওনারা জল দিতে পারেন নি। আর এই হোটেল মেক মাই ট্রিপ গ্রুপ রেকমেন্ড করে।  হোটেলের রেন্ট কম কিন্তু তাই বলে এরকম  অব্যবস্থা চিন্তা করা যায়না।

এবার আবার সেই এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে সাত নম্বরে যাওয়া। এবার অবশ্যি ইনভ্যালিড চেয়ারের বন্দোবস্ত করাতে ওরাই লিফট খোলানো ইত্যাদি কাজ করে নিল। প্ল্যাটফর্মে এত ভিড় যে কুলিরা না থাকলে পড়ে ট্রেনে ওঠা সম্ভব ছিল না। বেলা দেড়টার সময় মুম্বাই পৌঁছলাম। পথে আবার সেই মশলা চা, জৈন খাবার। পশ্চিম রেলপথ কি ভাবে যে তাদের জনে অন্য কেউ চড়ে না? এ ব্যাপারে আমার ই-মেল ফেরত এসেছে কেননা আমি নাকি ঠিকানা ভুল দিয়েছি। ঠিকানা আমি রেলের নিজস্ব সাইট রেলনেট থেকে নিয়েছি। যাকগে আমার ঘোরা সমাপ্ত হয়েছে এই ভাল। এখানেই আমার লেখনের সমাপ্তি।



 



 

 

আমার আমেদাবাদ ভ্রমণ

বুধবার, ১২ জুন, ২০১৩

আমার আমেদাবাদ ভ্রমণ তৃতীয় ভাগ

আমাদের পরের দ্রষ্টব্য স্থল হল বৈষনোদেবীর মন্দির। আসল বৈষনোদেবীর মন্দিরে আদলে প্রায় তাকে কপি করে এই মন্দির টি বানান হয়েছে। সাধারন , কিন্তু আসল মন্দিরের চেহারাটা কিছু আন্দাজ করা যায়। দুপুরের রোদ চরচরে হয়ে উঠেছে কাজেই এবার সোজা অক্ষরধাম মন্দিরে দিকে এগন গেলও।

হাইওয়ে থেকে এক চৌমাথাতে আমরা বেকে মন্দিরের সামনে দাঁড়ালাম,। এইবার শুরু হল মজা। দুপুর রোদ, গরম, সাথে বিসলেরীর বোতল। লাইনে দাড়িয়ে শোনা গেল বাইরের খাবার বাইরেই থাকবে ভেতরে যাবে না। আপনার পকেটে চকলেট থাকলেও সেটার ভেতরে প্রবেশ নিষেধ। আমার পকেটে এমার্জেন্সী হিসাবে সর্বিট্রেট থাকে সেটাতেও আপত্তি। কোমরের বেল্ট, মানি ব্যাগ কিছুই লাইনে নিয়ে ঢোকা যাবে না। গেটে মন্দিরের পাহারাদার পকেটের জিনিষ হাতে নিয়ে দেখে  বুঝতে পারলে আপনাকে ফেরত দেবে নয়তো আবার ফিরে ক্লোক রুমে জমা দিন। বোঝা গেল না যে পাহারাদাররা কোথা থেকে ট্রেইন্ড যে চোখে দেখে ওষুধ বুঝতে পারে কিন্তু বিসলেরীর বোতল বুঝতে পারে না। কোন রকম ইলেক্ট্রনিক মেশিন যথা, মোবাইল্ ‌ক্যামেরার প্রবেশ নিষিদ্ধ। ওগুলো কে জমা রাখতে হবে। সবার চেয়ে মজার জিনিষ হচ্ছে মাল থাকবে ওদের কাছে কিন্তু জিম্মেদারী আপনার।। আমাদেরই এর জন্য ভুগতে হয়েছে। আমরা একসাথে চারটে, আমার দুটো। মেয়ের জামাইয়ের একটা করে জমা দিয়ে টোকেন নিয়ে ছিলাম ফিরে পাওয়া গেল তিনটা ফেরত। মেয়েরটা নেই। যে জমা নিয়েছিল তার সাফ উত্তর জমা দেননি। আমরা নাছয়ড়বান্দা হওয়াতে আবার শুনলাম আপনার মিথ্যুক। তখন পুলিশে যে জমা নিয়েছে তার নামেই ডায়রী করার ভয় দেখানতে র‍্যাক থেকেই ওটা বেরল। আমি যখন লোকটির ছবি তুলে রাখতে গেলাম তখন সে ঐ ঘরের ভেতরে লুকিয়ে পড়ল।  তার আগে একবার বলে  আপনার হোটেলে ফেলে এসেছেন। আবার বলে আপনার লাস্ট শো শেষ হওয়া পর্যন্ত অপক্ষা করুন। সবার মোবাইল নেওয়া হয়ে গেলে যদি আপনারা সত্যি জমা দিয়ে থাকেন তবে পাওয়া যাবে। এটা ধর নেওয়া যেতে পারে দৈনিক হাজার দশেকের মতন মোবাইল জমা পড়ে তার মধ্যে একটা দুটো কি এরকম ভাবে নিয়ে নিতে কোন অসুবিধা নেই। এটা দেখে বোঝা যায় যে কে প্রবাসী লোক। সংস্থার পয়সার অন্ত নেই তারা চুরি করে না কিন্তু তাদের রাখা এই কর্মচারীরাই চুরি করার জন্য মুখিয়ে থাকে।

ভেতরে খাবার জিনিষ সব কিছুই পাওয়া যায়। আপনি যেহেতু আপনার ছোট বাচ্চার দুধের বোতল বাইরে জমা দিয়েছেন তাই আপনাকে ওদের দেওয়া দুধ (ভাল, মন্দ স্বাস্থ্যকর বা অস্বাস্থ্যকর) তাই নিতে আপনি বাধ্য।গরমের দিনে আইস্ক্রীম বাইরের থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হবে।

মন্দিরের কথায় আসা যাক। আয়তনে বিশাল জায়গা জুরে এর বিস্তৃতি, শোনা গেল প্রায় ২২/২৩ একর জায়গা জুড়ে। প্রমুখ স্বামীমহারাজ (BAPS এর গুরু) অক্ষরধাম মন্দিরের নির্মাতা। মন্দিরে ৭ ফুট উচু সোনার পাতে মোড়া স্বামীনারায়নের মুর্তি আছে। মন্দির চত্বরে তিনটি হল আছে যেখানে স্বামীনারায়নের সম্বন্ধে এবং উপনিষদ, রামায়ন এবং মহাভারত সম্বন্ধে কিছু দ্রষ্টব্য বস্তু আছে।

সন্ধাতে পৌনে এক ঘন্টা ধরে আলো, আগুন এবং জলের সাথে লেসারের আলোর খেলা দিয়ে নচিকেতা এবং যমের গল্প দেখান হয়। ৪০০০ ফোয়ারা, ২০০ লাইট আর এক ডজন ফ্লেম থ্রোয়ার এর সাহায্য একটা ভাল গল্পের দৃশ্য দেখান হয় সাথে দুজন অভিনেতাও অভিনয় করে দেখান। টিকিট কাটার জন্য লম্বা লাইন বাচ্চা বুড়ো, ফিট আনফিট সবাইকে এই লম্বা লাইন দিয়ে কম করে ৫০০ থেকে ৭০০ মিটার হেঁটে ঢুকতে হবে। কিন্তু অন্য ব্যবস্থা  আছে। আপনাকে এদের কর্তাদের কারুর সাথে লিঙ্ক রাখতে হবে তাহলেই এটা ১৫ থেকে কুড়ি মিটারে এসে দাঁড়াবে অর্থাৎ আপনাকে নির্গম পথ দিয়ে আগমণ করান হবে। বসে থাকত থাকেই দেখলাম বেশ কিছু লোকেদের এই কর্তারা বসিয়ে দিয়ে গেলেন।

শোতে আরও মজা লাগলো এটা দেখে যে স্বামীনারায়ন এনং যমকে একই বলার চেষ্টা দেখে। নচিকেতার প্রশ্নের জবাবে যম তাকে নিজের শান্ত রূপ দেখালেন যেটা স্বামীনারায়নের রূপ। এখন দেখি স্বামী নারায়ন কে?

স্বামী নারায়ন উত্তর প্রদেশের ছাপাইয়া তে ১৭৮১ তে জন্মান এবং ১৭৯৯ নাগাদ গুজরাটে এসে বসেন। গুরু রামানন্দ স্বামীর কাছে শিক্ষা নিয়ে নিজের নাম নেন সহজানন্দ স্বামী। তিনি ১৮০০ তে উদ্ধব সম্প্রদায়ের সৃষ্টি করেন যেটিকে স্বামীনারায়ন সম্প্রদায় নামে জানা যায়। তিনি ১ জুন ১৮৩০ তে মারা যান। মারা যাবার সময় তার ভাগ্নে দের সম্প্রদায়ের দুই ভাগের কতৃত্ত দিয়ে যান।

১৯০৭ সালে শাস্ত্রীজি মহারাজ ভাদতাল গদি ছেড়ে বোচাসন্যাসী শ্রী অক্ষরধাম পুরুষোত্তম স্বামী নারায়ন সংস্থার সৃষ্টি করেন তার পরে এর ভার নেন যোগীজি মহারাজ এবং এখন আছেন  প্রমুখ স্বামীজি মহারাজ এর কর্তা।১৯৯২ সালে নভেম্বর মাসে মন্দিরটির উদ্বোধন হয়।

শেষ পর্যন্ত অনেক খোঁজাখুঁজির পর মোবাইল পাওয়া গেল। আম্রাশে শেষ হবার পরে হোটেলে পৌঁছতে রাত সাড়ে দশটা বেজে গেল। খেয় নিয়ে ঘুম দিলাম। পরের ভাগে বাকীটা।

স্বামী নারায়ন মন্দিরের এই অব্যবস্থার উপর আমার একটা কবিতা এখানে দিয়ে দিচ্ছি।

 

 

 

 

 

স্বামীনারায়ন মন্দির

স্বামীনারায়ন মন্দিরের হয়েছে খুব নাম,

অনেকেই বলে তাকে অক্ষরধাম।

মন্দিরের নিয়মনীতি চলে তাদের হিসেব মতো,

নিক্তি ধরে মেপে নিয়ে তবে ভেতরে ঢোক

ঢোকার আগে তোমার কাছে যা কিছু আছে সবই দেখাও,

এমনকি পকেটের ওষুধ আর খুচরো পয়সাটাও।

ওদের ইচ্ছে মতন তখন হয়তো কিছু ফেরত পাবে

বাকি যা কিছু ছিল টোকেন নিয়ে জমা দিতে হবে।

উপরেতে লেখা আছে, মালের জিম্মেদারী যে যার নিজেই

ওদের কাছে যে জমা দিলেন তারও কোন প্রমান নেই।

দুটো মোবাইল জমা দিলে হয়তো একটা পাবেন আপনি

জিজ্ঞেস করলে সাফ উত্তর, "জমাতো আপনি দেননি

আর ভাগ্যে থাকলে শুনবেন, আপনি মশাই মিথ্যুক।

সত্যের মন্দিরের এটাই আসল স্বরূপ।

লিঙ্ক থাকলে হবে আপনার ব্যাকডোর দিয়ে প্রবেশ

আম জনতার জন্য লাইনের নেই শেষ

বাইরের যাকিছু (খাবার) বাইরেই থাক

নাহলে বেশি দাম দিয়ে কিনবে কার বাপ।

এর পরেও যদি মনে ইচ্ছে থাকে ওখানেতে যাবার

পকেটেতে রেখো খালি নোটের পাহাড়

তার পরে মেরে দিতে পার চক্ষু মুদে এক ঝাঁপ

কিছু হলে পরে জেনো ওদের সাতখূন মাপ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

.

মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০১৩

আমার আমেদাবাদ ভ্রমণ দ্বিতীয় ভাগ



হৃদয় কুটির ( সবরমতী বাস ভবন)
পরের দিন ঘুম ভাঙ্গল সকাল সাতটায়। প্রোগ্রাম তৈরী ছিল সকালে সবরমতী আশ্রম আর বিকেল  অক্ষরধাম মন্দির। হোটেলে খবর নিয়ে জানা গেল অক্ষরধাম মন্দির আমদাবাদে না বরং গান্ধীনগরে, প্রায় ত্রিশ কিলমিটার দূরে। অক্ষরধাম মন্দিরে সন্ধের সময় লাইট এন্ড সাউন্ডের এক প্রোগ্রাম হয় সেটা নাকি অবশ্য দ্রষ্টব্য। কিন্তু তাহলে একটা নিজস্ব গাড়ী (ভাড়ার অবশ্যই, কে দূর থেকে নিজের গাড়ী নিয়ে যাবে)) চাই। লোকাল ইন্ডিকা গাড়ী এ সি আট ঘন্টার জন্য নেবে ১৩০০ টাকা এর মধ্যে ৮০ কিলমিটার পর্যন্ত আলাদা মাইলেজ লাগবে না। যদিও একটু টাইট হয়ে বসতে হবে তবুও বড় গাড়ী পাওয়া গেল না বলে সেটাই নেওয়া হল। দশটার সময় রওয়ানা হওয়া গেলও। প্রথমে সবরমতী আশ্রম হোটেলের থেকে বেশী দূরে নয়। প্রচুর বাঙ্গালী দর্শকের ভিড়। দেখবার মধ্যে গান্ধীজীর কিছু ছবির গ্যালারী। সাথে তার ব্যবহৃত কিছু চরখা ইত্যাদি জিনিষের ডিস্প্লে। মজা হছে সমস্ত গ্যালারীতে তার কলকাতার ছবি দেখলাম না। অবশ্যি পুর্ব বাংলার দাঙ্গার সময়কার দুটি (মনে হচ্ছে) আছে। এটা ইচ্ছেকৃত কিনা বোঝা গেল না।গ্যালারী দেখে বার হবার পরে পাশেই হৃদয় কুটীর, ওনার বাসভবন। একটু দূরে প্রার্থনা করার জায়গা। পাশ দিয়ে সবরমতী নদী বয়ে গেছে। নদীর দুপাশ এখানে বাঁধানো বলে মনে হয় নদীটা সরু তা ছাড়া গরমকাল বলে এমনিতেই নদীতে এই জায়গাটাতে জল নেই। নর্মদা বাধের কল্যানে বাধের থেকে নর্মদার জল এখন সুদূর গুজরাটে সবরমতী নদীতে পাঠান হচ্ছে। গুজরাট সরকার নদীর পাশে বেড়ানর জন্য হাঁটা পথ তৈরী করেছে যাকে এরা প্রমেনেড বলছেন

হাতীসিঙ্গের জৈন মন্দির (সন্যাম ভাগ)
আমি ইন্টারনেট দেখে আমেদাবাদের দর্শনীয় জায়গা গুলোর একটা লিষ্ট তৈরী করে নিয়েছিলাম। ট্যাক্সির ড্রাইভারকে দিতে সে বলল যে সে যা যা দেখার আছে তা নিজে থেকেই দেখিয়ে দেবে, খালি আমার স্ত্রীকে দেখিয়ে বলে দিল যে যেখানে ওনাকে অনেকটা হাঁটতে হবে সেগুলোকে সে বাদ দিতে চায়। আমাদের তাতে কোন আপত্তি নেই। সবরমতী আশ্রম দেখে আমাদের গন্তব্য স্থল হল সিদি সৈয়দ মসজিদের দিকে। পথে এক লস্যির দোকান। লোকে লাইন দিয়ে লস্যি কিনছে আর নিয়ে যাচ্ছে। এক গ্লাস রাজাওয়াবাড়ী লস্যির (অনেকটা মধ্যপ্রদেসের বা ইন্দোরের ঘমন্ডী লস্যির মতন) দাম ৬০ টাকা। সাথে বাদাম পেস্তা দেওয়া আছে। দোকানের কাছেই দিল্লী দরয়াজা। আগে যখন আমেদাবাদের চারদিকে দূর্গের মতন দেওয়াল দেওয়া ছিল তখন শহরে ঢোকার জন্য কতক গুলো দরজা ছিল। এখ দেওয়াল আর নেই, পুরনো নিদর্শন হিসাবে দরজা গুলো আছে।

জৈন মন্দিরের পিলারে কারুকার্য
এখান থেকে আমরা যাব হাতী সিঙের মন্দির।। শ্বেতাম্বর জৈন সমাজে মন্দির, আবু পাহাড়ের মন্দিরের আদলে তৈরী। খালি আবুর মন্দির শ্বেত মর্মরের আর এখান দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর মার্বল দিয়ে তৈরী। মন্দিরটিতে জৈন তীর্থঙ্কর ধর্মনাথের নামে তৈরী করা। ১৮৫০ সালে শেঠ হাতী সিং এটিকে তৈরী করেন। মন্দিরের ভেতরে ছবি তোলা নিষেধ। কাজেই ভেতরের ছবি তোলা গেলনা। একটি বাইরের সন্যমভাগের ছবি এবং তার পিলারের কারুকার্যের ছবি দিলাম।

সিদি সৈয়দ মসজিদের জালির কাজ
আমাদের পরবর্তী গন্তবয় স্থল হচ্ছে সিদি সৈয়দের মসজিদ। লাল পাথরের ইপর জালির কাজ করা অপূর্ব স্থাপত্য কলা। সাথে যে ছবিটা দিলাম সেটী আমেদাবাদের ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টের লোগো হিসাবে বিখ্যাত হয়ে আছে। ১৫৭৩ সালে ঝঝর খানের এক সৈন্য সিদি সৈয়দ এই মসজিদ টি তৈরী করেন। কিন্তু তার প্ল্যান মত করে মসজিদটি মিঘলদের গুজরাট আক্রমনের আগে শেষ করা যায়নি।রাস্তাতে গাড়ী দাঁড় করানর অসুবিধা ছিল বলে আর ভেতরের কিছু দেখা হয়নি। আমদের অরিজিনাল প্ল্যান অনুযায়ী এখান থেকে ফিরে একটু বিশ্রাম নিয়ে বেলা দুটো নাগাদ অক্ষরধাম রওয়ানা হবার কথা কিন্তু ট্যাক্সি ড্রাইভার এর কথা হল যে মাদের লিস্টে আদালাজের ভাব (বাওলি বাঁ সিঁড়ি দিয়ে নাম্র কুয়া দেকবার আছে। সেটা প্রায় অক্ষরধাম মদিরের কাছেই কাজে কাজে হোটেলে বিশ্রাম না নিয়ে বাকী দ্রষ্টব্য জায়গা গুলোকে দেখে শেষ করে আমরা একেবার অক্ষর ধামে গিয়ে খয়া এবং একটু বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যাকালীন শো দেখতে পারি। কবার সম্মতি পেয়ে গাড়ী রওয়ানা দিল অক্ষরধামের দিকে। প্রথম দেখবার জায়গা হল ইসকনের মন্দির। বেলা ১ টার সময় মন্দির বন্ধ হবার কথা। জুতএ স্টলে জুত জমা দিয়ে গরম পাথরের উপরে পাতা মাদুরের উপরে হেঁটে মন্দিরে ঢকা গেল। ভেতরে কোন রকম আওয়াজ করা বারন এবং ছবি তলাই বারন। কিন্তু এ ব্যাপারে কোন আইনের একমাত্র গুজরাটি ভাষায় লেখা ছাড়া কোন মানা করার বন্দোবস্ত দেখা গেল না।। ভেতরের একটা ছবি তুলে নেবার পরে নটিশটা দেখে আর ভেতরের ছবি তুলিনি।বাইরে বেড়িয়ে মন্দিরের একটা ছবি নিয়েছি কিন্তু সেটা সাধারন ছবির মত হওয়াতে আর সেটাকে এখানে দিলাম না।

আদালাজের বাওলির ব্যালকনি
 
এখান থেকে বেড়িয়ে আমারা ধরলাম গান্ধীনগর হাইওয়ে। রাস্তায় পড়ল গুরুদ্বারা। পরে বিখ্যাত গুরুকুল স্কুল। প্তহে পড়বে আদালাজ গ্রামের ভাও বাঁ বাওলি বাঁ স্টেপ অয়েল। স্থাপত্য কলার এক অপুর্ব নিদর্শ এই ভাব। ১৪০০ সালে সুলতান মাহমুদ বেগদা ভীর সিং কে হারিয়ে দেন এবন ত্র স্ত্রী রূপবা কে বিবাহ কতে চান। রাণি রূপবা এ বিয়েতে রাজী হবার জন্য এক সর্ত দেন যে এক ভাব বাঁ বাওলি তিরি করে দিতে হবে। মাহমুদ এতই বিয়েত উতসুক ছিলেন যে তিনি রাজী হলে এবং কুয়া তৈরী হল। রাণী রূপবা কুয়ার পুজা করবার পরে ঐ কুয়াতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণত্যাগ করেন। সুলতান মাহমুদ এই কুয়ার কাজে নিজেই এত মুগ্ধ ছিলেন যে যাতে আর কেউ এই রকম কুয়া তৈরী করতে না পারে তাই প্রধান ৬ জন কারিগরকে হত্যা করে তাদের এই কুয়ার পশ্চিম দিকে কবার দিয়ে দেন। কুয়াটি পাচতলা এবং ভারতীয় বাস্তু শাস্ত্র অনুযায়ী তৈরী পাচতলা যার মধ্যে জমির নীচে চারতলা ধাপে ধাপে নেমে গেছে।
য়াজ এই পর্যন্ত লিখেছি। বাকীটা আগামী ব্লগে প্রকাশ্য।
 

 

 

.

 

সোমবার, ১০ জুন, ২০১৩

আমার আমেদাবাদ ভ্রমণ



 
গরমের জন্য বোধহয় আমার মাথায় কিছু গণ্ডগোল হয়েছিল, নয়তো যখন মেয়ে জামাই এসে বলল যে আমেদাবাদের প্রোগ্রাম করে ওরা একেবারে কনফার্ম টিকিট এনেছে তখন আমি বিশেষ আপত্তি করিনি। তাছাড়া যখন আরও বলল যে, টিকিট এ সি চেয়ারে আর হোটেলেও এ সি রুম বুক করা টাকা পাঠান হয়ে গেছে তখন আর আমার আপত্তির কোন রাস্তাই রইল না। কিন্তু তখন এ কথা মাথায় আসে নি যে ট্রেনে এ সি; হোটেলে এ সি; ট্যাক্সিতে এ সি হলেও সাথে তো পর্টেবল এ সি মেশিন নিয়ে যাবনা কাজেই বেড়াতে বেড়িয়ে যখন এ সি চেম্বারের বাইরে যাব তখন গরম হাওয়ার ঝাপটা খেতেই হবে। বিশেষত যখন সাথে বেষ্ট হাফের চলতে বেশ কষ্ট হয়।

অতএব রওয়ানা হলাম। পার্টীতে আমরা ছজন। মেয়ে জামাই, দুই নাতি এবং সস্ত্রীক আমি। বাড়ী থেকে শুরু করলাম বেলা দশটায়। লোকাল ট্রেনে পানভেল থেকে সি এস টি;তার পরে ট্যাক্সি নিয়ে সেন্ট্রাল; তার পরে ট্রেন। দুপুরের লাঞ্চটা সেন্ট্রাল ষ্টেশনে সেরে নিয়ে ট্রেনে উঠলাম। গাড়ী ছাড়ল ডট আড়াইটে। ডবল ডেকার ট্রেন। আমাদের দুজন সিনিয়র সিটিজেন লোকের সিট সিঁড়ি দিয়ে নেমে নীচের ডেকে। বাকী ওদের দরজার লেভেলে মিডল ডেকে। টয়লেট, ওয়াশিং বেসিন মিডল লেভেলে। ইতিমধ্যে রওয়ানা হবার পরে দেখা গেল আমাদের দুজন সিনিয়রের আইডেন্টিটি প্রুফ সাথে আনা হয়নি। মাঝ রাস্তায় জামাই নেমে ফেরত গিয়ে ওগুলোকে আবার নিয়ে এল।

ট্রেনে আমার সিট নম্বর হল ৭, স্ত্রীর ৮। ৭ নম্বর সিটে গিয়ে দেখা গেল জানলার ধারে সিঙ্গল সিট, পশ্চিম দিকে এবং সাদা কাচের জানলাতে কোন পর্দা নেই। ইতিমধ্যে মেয়ে এসে তার মাকে ওদের ওখানে নিয়ে গেল এবং নাতি এসে তার দিদুর জায়গাটা নিল। কিন্তু কিছুক্ষন বাদ থেকেই গালে রোদের তীব্র তেজ জ্বালা ধরাতে শুরু করল। এসব ক্ষেত্রে গাড়ীত একজন আটেন্ডেন্ট থাকে । তাকে বা টি টি ই কাউকেই ঘন্টা দেড়েক পর্যন্ত দেখা পাওয়া গেল না। বেলা সাড়ে চারটের পরে তাকে দেখে বলার পর তিনি মৌখিক সহানুভূতি ছাড়া আর কিছুই করলেন না। অবশ্যি কিছু করার ছিল না। পর্দাটা মিসিং। ট্রেনটা সকালে আমেদাবাদ ছাড়ে, বেলা দেড়টাতে মুম্বাই পৌছয় আবার আড়াইটেতে ছেড়ে রাতে আমেদাবাদ পৌছয়। যা কিছু ঠিকঠাক করার তা আমেদাবাদেই হবে। রোদের তেজ কমার পরে বেশ ভালই লাগছিল। যেহেতু এই লাইনে আমি প্রচুর যাতায়াত করেছি তাই জানলার সিটের থেকে বাইরের দৃশ্য দেখার কাজটা নাতির আর কিছুটা রানিং কমেন্ট্রী করার কাজ আমার। ইতিমধ্যে ছা খাবার দরকার পড়লেও সেটা মুলতুবী রাখতে হয়েছিল। কেননা যদিও ট্রেনে প্যান্ট্রী আছে, আর সার্ভিস আই আর সি টি সি র, কিন্তু চা পটে নয় এবং তাতে এলাচ, লবং ইত্যাদি দিয়ে সেটাকে পাচন বানাতে এরা খুব পারদর্শী। ঐ মশলা চা ছাড়া লোকে এখান অন্য চা খায় না। রাত আটটার সময় রেডীমেড কফি পেয়ে শরীর কিছু চাঙ্গা হল। ট্রেন পৌছনোর কথা রাত সয়া নটায়। নটাতে ট্রেন আমেদাবাদ ষ্টেশনের বাইরে এসে দাঁড়িয়ে গেল। আমরা যখন প্ল্যাটফর্মে পৌঁছলাম তখন রাত সাড়ে দশটা। গাড়ী এল সাত নম্বর প্ল্যাটফর্মে। বেরোনোর রাস্তা এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম দিয়ে। কোন লিফটের বন্দোবস্ত নেই বললে ভুল হবে। প্রত্যেক প্ল্যাটফর্মে একটা করে লাগেজএর জন্য লিফট আছে। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য , সাত নম্বর প্ল্যাটফর্মের লিফটে দরজা বন্দ। কোন লফট ম্যান নেই। অতএব কোমর ভাঙ্গা স্ত্রী এবং হৃদরোগী আমাকে হেঁটেই সিঁড়ি ওটা নামা করতে হল। বাইরে অটো স্ট্যান্ডে পৌঁছলাম তখন প্রায় এগারোটা।

অটো নিয়ে গন্তব্য হোটেল নীলকন্ঠ ব্লিস, যেখানে রুম ঠিক করা আছে। মজা হল ওখানে গিয়ে শুনলাম বুকিং ওরা ডাইভার্ট করেছে ওদের আর একটা হোটেল নীলকন্ঠ সাহারাতে। একটু কড়া ভাবে কথা বলার পর ওরাই আবার অটো করে এই হোটেলে পৌঁছে দিল। যদিও লেখা আছে ২৪ ঘন্টা রুম সার্ভিস তবুও রাতে কিছুই পাওয়া গেল না। আবার জামাই বেড়িয়ে বান আর অমলেট রাস্তার স্টল থেকে নিয়ে আসার পর খেয়ে নিদ্রার কোলে পড়া গেল। কাল সকাল থেকে ট্যুর শুরু। তার বিবরন কালকের ব্লগে।  

রবিবার, ৯ জুন, ২০১৩

post analysis

<div style='text-align:center;'><img src='http://webtarantula.com/widgets/seo.php?site=spicydilip.blogspot.in&h=e43ecf&type=middle' border='0' /><br />website analysis by WebTarantula</div>

শনিবার, ৮ জুন, ২০১৩

জিনিষের অপচয় কেন?

জিনিষের অপব্যবহার কেন?
মানুষের বংশবৃদ্ধিতে পুরুষ ও নারীর প্রয়োজন আছে ঠিক,
কিন্তু তাদের ভোগের বাসনা ভোলাচ্ছে তাদের অভিষ্ট দিক।
ডাক্তারী শাস্ত্রমতে পুরুষের শুক্রাণু আর নারীর ডিম্বানুর মিলনে
হয় তাদের অপত্যের প্রজনন।
কিন্তু আমেরিকার নারীদের একাংশ করছেন
তাদের স্বাস্থ্য বৃদ্ধির জন্য তাকে ব্যবহার
পুরুষের বীর্যকে বানিয়েছেন তাদের খাবার।
এর পর কোনদিন দেখব পুরুষের বীর্য কৌটো বন্ধ হয়ে
সাজান আছে দোকানের তাকে সারবন্দী দিয়ে
সন্তানবতী হবার জন্য নারীদের উঠছে হাহাকার,
পাচ্ছেনা তারা করতে বীর্যের যোগ্য ব্যবহার।
ভেবে দেখুন সেদিনের অবস্থাটা
শূন্যর নীচে নেমে গেছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির দরটা।
তোমাদের যুক্তি, অন্য জীবের ডিমে যদি না থাকে মানা
তবে পুরুষের ডিম খেলে কেন করছ বাহানা।
তোমাদের প্রতি আমার উপদেশ
করো এখনই এই অপচয়ের শেষ।।
A small news item in the Hindustan Times, Mumbai states that, American women are presently using the male ejaculation as food to increase as food supplement. Scientists are afraid that this behavior may result in reducing the production of children at a later date.
Based on this news feature I wrote a small write-up. The Bengali version is given above.
The English version is below
 
“It is certain that both men and women require each other
As their children will come from their union together
But now a section of American women
Are using male ejaculation ad their food supplement
Some day later ejaculation will be bottled
Displayed as food in the racks of stores
Women are pining to be mother
But searches in vain for male sperms
The population growth may become negative
Though you may say why make a fuss
When we consume human eggs, if you agree for other eggs”
But take my advice
Don’t use a cannon to kill a mosquito.
 
 
 

শুক্রবার, ৭ জুন, ২০১৩

কিছু কবিতা

(১)মোটা হইয়োনা তুমি
না হয়োনা গৃহিনী আমার,আর মোটা হয়ো না
আর মোটা হলে তোমায় রিকশাতে নেবে না
সন্ধ্যেবেলা হাওয়া খেতে যেতে তুমি পারবে না
মিনতি শোন আমার, আর মোটা হয়ো না।
এখনই ব্লাউজগুলো ছোট হচ্ছে বলে খালি গায়ে থাকো
শাড়ীগুলোকে আর গামছা বানিও নাকো
হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলে থাকবেই যে ওখানে
ক্ষমতা আমার নেই যে তুলব তোমায় টেনে।
খবরদার, বাজে কথা বলবে নাক তুমি
তুমি কি চাও খাওয়া এবার বন্ধ করি আমি
এমন কি আর মোটা আমি, ওজন হবে আশী
তোমার কাছ সেটা কেন লাগছে খুব বেশী
পারবনা আমি তোমার বোনের মত খ্যাংরা কাঠি হতে
কোথায় যে উড়ে যাবে একটু ঝোড়ো হাওয়াতে
কি যে খায় সারা দিনে জানি নাকো আমি
এদিকে দেখ ওজন আছে চল্লিশের কমই।
 
 
(২) কারেন্ট কেন গেল
শুতে গেলাম তখন বাজে রাত বারটা
কারেন্টটা চলে গেল রাত তখন বোধ হয় একটা,
ভীষন গরম, করি ছটফট
মাথায় চিন্তা আসে উদ্ভট,
ঘুম তো আর এলনারে ভাই
ভোর না হতেই উঠে পড়লাম তাই
ভাবলাম লিখে ফেলি চিন্তা গুলো
ক'ঘন্টা বাদে কি আর মনে পড়বে ওগুলো?
খাতা কলম নিয়ে লিখতে বসলাম
আরে ভাই, কারেন্ট থাকলে তো নেটেই লিখতাম।
কারেন্ট তো চলে গেল কিন্তু কোথায় গেল?
কেন গেল আর কেনই বা এখন ফিরে এল?
কিসের লোভে গিয়েছিল?
নাকি বিরোধী পক্ষ অপহরণ করেছিল?
না কেউ ওকে ঘুষ দিয়েছিল?
গেল যদি রাত একটায়, আগে বা পরে নয় কেন?
মনে সন্দেহের অবকাশ রেখে গেল কেন?
রাজ্য সরকার কি এ নিয়ে তদন্ত করবেন?
বিরোধী পক্ষ কি তাতে রাজী হবেন?
সি বি আই না সি আই ডি,তদন্ত কাকে দিয়ে হবে?
এনিয়ে কি কোন পি আই এল মামলা হবে?
এ চিন্তা গুলোর কোন জবাব না পেলাম
ভাবত ভাবতে মাথা হয়ে গেল জাম।
কারেন্ট এসে গেছে, এবার শুখোবে ঘাম
তাই লেখাটাও এখানে শেষ করলাম।
 
 
(৩) আচমকা দেখা হলে
এই দারুন গরমে, সারা গায়ে ঘেমে
আটটা দশের লোকাল থেকে নেমে
যখন উঠতে গেলাম বাসে
মিহি গলায় "এই শোন" বলে কে ডাক দিল পাশে
ভীষণ রেগে, কটমটিয়ে তাকিয়েদেখি তোকে
মনে হল নিশ্চয়ই ভুল দেখছি চোখে
দশটা বছর আগে, রেজাল্ট বেরোনর পরে
এগিয়ে ছিলাম আমরা আলাদা রাস্তা ধরে
স্বপ্ন ছিল চোখে,আমার হবে বাড়ী গাড়ী
ত্র জন্যই হয়ছিল সেই সে ছাড়াছাড়ি
তোমার সাথে কথা শেষ হয়েছিল এই বলে
জাননাকি সুমি তুমি,"সবুরে মেওয়া ফলে।
এর কটাস দিন পরেই চড়ে নিজের গাড়ী
আসব নিয়ে তোমায়, তোমার শ্বশুর বাড়ী
হায়রে কপাল, স্বপ্ন আমার ভেঙ্গে চূরমার
বাড়ী গাড়ী দূরে থাক, এখন চাল ডালের দরকার
সকালে মাকে খাইয়ে দিয়ে ছাড়ি নার্সের কাছে
সারাটাদিন থাকে পড়ে নিজেই নিজের কাজে
আমার কথা তো অনেক হল, তোর কথা বল আগে
বিয়ে করেছিস, না জ্বলছিস এখনোই সেই রাগে
কাকে করলি?, লাইনে কে এলরে আগে
করল কে কব্জা তোকে পেয়ে নিজের বাগে।
"প্লেজ আমায় মাপ করবেন, ভুল করেছি আমি
পেছন থেকে মনে হল আমার ক্লাসমেট শামী
হাটার ধরণ তো একই লাগছিল
কিন্তু সেই চেহারাটা যে কোথায় গেল।
কি বলছিস আবোল তাবোল, আমিই তো সেই শামী
শামু তোর ভুল ভাঙ্গাতে কি করব আমি।
বলত দেখি, ইন্টি বিন্টি সিন্টির পরে আমরা কি করতাম?
মনে পড়েছে, উকি মারে আকাশে বলে দু হাত তুলতাম।
মাইরী বলছি তোকে দেখে আনন্দ হচ্ছে যা
আড্ডা মারি বসে নিয়ে একটা কাটিং চা।
কল্পনার এরা চিনল দেখ একে অপরকে
আমি হলে হয়তো তাকিয়ে থাকব অপলকে।।